Bipodtarini Puja Vidhi In Bengali: Bipodtarini Puja is going to be celebrated on 5th July 2022. In Bengali year 20th Aashar,1429 Bangabda.
If you are looking for Bipodtarini Puja Vidhi with Brotokotha then this post is for you.
Also Read:
Bipodtarini Puja Mantra In Bengali (বিপদতারিণী পূজার মন্ত্র)
Bipodtarini Puja Vidhi In Bengali ( বিপদতারিণী পূজা পদ্ধতি)
বিপদতারিণী ব্রতের নিয়ম
পূর্ব দিন একবেলা নিরামিষ আহার করতে হবে.
রাতে লুচি বারোটা খেতে হবে
কোনো পোড়া খাবার যেমন রুটি খাওয়া চলবে না
ব্রতের দিন ১৩টি ফল দিয়ে পূজো দিতে হবে
এই ১৩টি ফল দেওয়ার অর্থ ১২ মাসে ১২টা ফল আর সংসারের সব ঝামেলা নিয়ে ১টি ফল
এরপর কিছু মিষ্টি দিয়ে মা কে পূজো দিতে হবে ।পূজো দেওয়ার পর মায়ের ব্রতকথা গুনে অঞ্জলি দিতে হবে। ব্রতের দিন পুজোর প্রসাদ খেয়ে দিনে রাতে ফল ও মিষ্টি খাওয়া নিয়ম
বিপত্তারিণী চন্ডীব্রত কথা
আষাঢ়ত্স্য শুক্ল পক্ষ দ্বিতীয়ার পর
এই ব্রত আচরিবে দশমীর ভিতর
পূর্বদিনে নিরামিষ খাবে একবার
এই ব্রত করবে শুধু মঙ্গলবার
ত্রয়োদশ গ্রন্থি যুক্ত রক্তবর্ণ ডোরে
নারী নরে সবে ধরে দক্ষিণ করে
একদিন যোগীবর বিধির নন্দন
পর অনুগ্রহ হেতু করেন ভ্রমণ
ক্রমে ক্রমে সর্বলোকে করিয়া ভ্রমণ
কৈলাস শিখরে উপনীত তপোধন
একদিন নারদ ঠাকুর স্বর্গ মর্ত্য পাতাল ভ্রণ করতে করতে কৈলাসে উপস্থিত হয়ে হর – পার্বতীকে প্রণাম করে বললেন- “হে দেবাদিদেব মহাদেব বলুন কোন ব্রত আচরণে স্ববাঞ্ছিত ফল লাভ করে নরগণে। আরও বলুন, কোন ব্রত করলে সঙ্গে সঙ্গে ফল পাওয়া যায়। এই কথা শুনে দেবাদিদেব মহাদেব গৌরীর দিকে চেয়ে একটু মুচকি হেসে বললেন, “ একমাত্র বিপত্তারিণী চণ্ডীর ব্রত কর সার। এই ব্রত করলে সঙ্গে সঙ্গে ফল পাওয়া যায়। ” তখন নারদ বললেন ‘তা তো শুনলাম এই ব্রত কে করেছিলেন বা কি করে প্রচার হল। হে মহাদেব আমাকে সৰ বিস্তারিত বলুন
“ তখন মহাদেব বললেনঃ “বিদর্ভ দেশে এক রাজা ছিলেন। এই রাজার রাণীর নাম ছিল হৈমবতী । রাণী রূপে গুণে অতুলনীয়া, সেই রাণী এক মুচির মেয়ের সঙ্গে সই পাতিয়েছিলেন এই মুচির মেয়ে রাণীকে চুল বেঁধে দিত আলতা পরিয়ে দিত, রাণীর সঙ্গে কথোপকথন করতে এবং রাণীর পরিচর্যার দিবারাত্রি থাকতো। একদিন রাণী মুচি সইকে বললেন, সই তোর বাবার তো গরুর চামড়ার কাজ তা আমি শুনেছি যে গো-মাংস অস্পৃশ্য গো মাংসের রূপ কেমন, রং কেমন দেখবার ইচ্ছা হয়েছে, জানিনা। কেন এই ইচ্ছা হল, তোকে এই আশা পূর্ণ করতেই হবে। এই কথা শুনে মুচি সই বলল, বল কি রাণী সই ? এই রাজপুরীর মধ্যে চতুর্দিকে প্রহরীবেষ্টিত আমি কেমন করে গো-মাংস তোমায় দেখাব?
রাণী বললেন, একটি পাত্রে ভরে একটি বস্ত্র ঢাকা দিয়ে আমার খাটের তলায় রেখে দিও । আমি সময় মত দেখে, ফেলে দেব। সত্য সত্যই একদিন একটি পাত্রে ভরে গো-মাংস এনে নতুন বস্ত্র ঢাকা দিয়ে রাণীর খাটের তলায় রেখে গেল রাজবাড়ীর মধ্যে চতুর্দিকে দাসদাসীরা পরিষ্কার করতে করতে একটি দাসীর নজরে পড়ল ঐ পাত্র। সেই দাসী মনে নতুন বস্ত্রে ঢাকা এই পাত্রটি নিশ্চয় কোন খাবার জিনিষ হবে, কেউ রাণীর জন্য রেখে থাকবে। আমি ঢাকা খুলে খেয়ে নিই — দাসী এই মনে ভেবে চতুর্দিকে লক্ষ্য করতে লাগল। কেউ দেখছে কিনা। দেখল কেউ কোথাও নেই । ঢাকাটি খুলে দেখল, খাবার তো নয়ই, উহা গো-মাংস । খাওয়া হল না, তার উপর গো-মাংস।
Bipodtarini Puja Vidhi In Bengali
সেই রাগে ছুটে গিয়ে রাজাকে জানালেন – “ মহারাজ সর্বনাশ ঘটেছে। ” রাণীর ঘরে খাটের তলায় কে নতুন বস্ত্র ঢাকা দিয়ে এক পাত্র গো-মাংস রেখেছে ” এই খবর শোনা মাত্র রাজা রাগান্বিত হলেন এবং চিৎকার করে বলতে লাগলেন – ‘কি রাজপুরীর মধ্যে আবার রানীর ঘরের খাটের তলায় এক পাত্র গো-মাংস কে রেখে গেল কেউ দেখতে পেল না। সন্ধান লও যে এই কাজ করেছে তার শিরশ্ছেদ হবে’ একজন পরিচারিকা রাজার কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গে রাণী-মাকে সংবাদ দিল – রাণীমা সর্বনাশ হয়েছে। আপনার ঘরে কে নাকি গোপনে গো-মাংস রেখে গেছে। তাই রাজার আদেশ, তার শিরশ্ছেদ হবে।
এই কথা শুনে রাণী চমকে উঠলেন এবং চিৎকার করতে লাগলেন এ আমি কি করলাম। খেয়ালের বশবর্তী হয়ে আজ এই গো-মাংস দেখার জন্য আমার মুচি সইয়ের প্রাণ যাবে। আমাকেও অপমান অপদস্ত হতে হবে এবং রাজপুরীর মধ্যে একটা অশান্তি হবে। আমি এখন কি করি? হঠাৎ মনে এল – শুনেছি দেবতারা বিপদে পড়লে মহাশক্তির স্মরন নেয়, তিনি বিপদের সময় এসে রক্ষা করেন। আমিও স্মরন লই। দেখি কি হয়। এই বলে গলে বস্ত্র দিয়ে ঘরের মধ্যে একমনে মহামায়া কে ডাকতে লাগলেন :
মা বিপত্তারিনী তারিণী তার মোরে বিপদে পড়িয়া শিবে ডাকিমা তোমারে, কি কব তোমার উক্তি ও মা হরজায়া বিপদে পড়েছি শিবে রাখ মহামায়া। মা বিপত্তারিনী, তুমি মা শিব করিব তোমার ব্রত যতকাল জীব।।মা বিপত্তারিনী আমি প্রতিজ্ঞা করলাম যতদিন বাঁচবো ততদিন আমি তোমার ব্রত করব। তুমি আমায় এই বিপদ থেকে রক্ষা করো বলে রানী কাঁদতে লাগলেন। মা বিপত্তারিনী দৈববাণী হয়ে বললেন – “রানী তোর ডাকে তো আমি প্রসন্ন হয়েছি, যে বিপদ কালে আমায় বিপত্তারিণী চন্ডী বলে ডাকে তাকে আমি বিপদ থেকে রক্ষা করি। তাই আমার নাম বিপত্তারিণী চন্ডী ।
আমার বরের পাত্রে আর গো-মাংস নেই, ফলে ফুলে পূর্ণ করে দিলাম । তুমি রাজাকে দেখাও। ” রানী উঠে গিয়ে পাত্র খুলে দেখেন আর গো-মাংস নেই । ফুলে ফুলে পূর্ণ হয়েছে। রানী হাত জোড় করে বিপত্তারিনীর উদ্দেশ্যে প্রণাম করছেন এমন সময় রাজা খড়গ নিয়ে উপস্থিত হয়ে বললেন – “রাণী, কোথায় গো-মাংস দেখাও আমারে।রানী বললেন মহারাজ গো-মাংস ছিল সত্যি কিন্তু আর নেই। মা বিপত্তারিনী চন্ডীর কৃপায় এই দেখো গো-মাংস ফলে ফুলে পূর্ণ হয়ে আছে।
তৎক্ষণাৎ রাজা খড়গ নামিয়ে গলায় বস্ত্র দিয়ে হাত জোড় করে বললেন – “মা বিপত্তারিণী চন্ডী, তোমার এত করুণা মা, আজ ভক্তকে বাঁচাতে ভক্তের সম্মান রক্ষা করতে, তুমি মহাশক্তি হয়ে নিজে হাতে গো-মাংস সরিয়ে ফেলে ফলে-ফুলে পূর্ণ করে দিলে মা, তোমার এত দয়া ? আমিও প্রতিজ্ঞা করলাম, যতদিন বাঁচব ততদিন তোমার ব্রত প্রচার করাটাই আমার জীবনের একমাত্র মহাব্রত। সারাজীবন তোমার মহাব্রত পালন করব। তুমি আমার প্রণাম গ্রহণ কর।” সেই দিন থেকে এই বিপত্তারিণী ব্রত প্রচার হল।